‘ভ্রমণ ‘শব্দটি শুনলেই খুশি তে আত্মহারা হয়ে যাই আমি । সবসময়ই ভ্রমণের প্রতি একটা আলাদা ভালবাসা কাজ করে🥰। ভ্রমণ প্রিয় মানুষ হলেতো কথাই হবে না। ভ্রমণ এর মাধ্যমে শুধু যে আমরা আনন্দ পাই তা নয় জানতে পারি অনেক অজানাকে
সালটি ছিল ২০১৬। জেএসসি পরীক্ষা শেষ তাই হাতে ছিল ভ্রমণের জন্যে কিছু সময়। তাই আব্বু আম্মু কে রাজি করালাম কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। অনেক ভাবনা চিন্তা করে আমরা পরিবারের সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম এবার একটু সমুদ্র দেখে আসি।
সাগরের কথা মাথায় আসতেই মনে পারল বাংলাদেশের দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চালে অবস্থিত অপুর্ব সুন্দর সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। যেই সৈকত সাগরকন্যা নামে বিখ্যাত। ১৮ কিলোমিটার বিস্তৃত কুয়াকাটা বাংলাদেশের নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত।
ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় জন্মভুমি”
তো যেমন কথা তেমন কাজ। আলোচনা করে ১০ ডিসেম্বর দিনটি ঠিক করা হলো।। বেরাতে যাব এই কথা শুনেই আনন্দে আত্মহারা আমি। ১০ ডিসেম্বর রাত ৯ টা ৩০ মিনিটে ছিলো আমাদের বাস।বাস ভ্রমণ টা ছিল অন্য রকম আনন্দের। ভোর বেলায় আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌছালাম। ঢাকার শহরে জীবন থেকে বের হয়ে একটু গ্রাম্য ভূমির স্পর্শ পাওয়ার মজাই আলাদা।
বাতাসের সাথে স্নিগ্ধ সবুজ পাতার গন্ধ মোন ভরে যায় তখন। এর পরে একটা গাড়ি করে আমাদের হোটেল এ উঠলাম। হোটেল টা ছিল অনেক শুন্দর করে সাজানো। এর পরে বিশ্রাম নিলাম আমরা সবাই।
পরের দিনটি শুরু হয়েছিল সূর্যোদয় দেখে। অপুর্ব সুন্দর সেই দৃশ্য। কুয়াকাটার পুর্ব প্রান্তে গঙ্গামতি সূর্যোদয় দেখার জন্য সেরা জায়গা। শুধুই কি সূর্যোদয়? বালির অসাধারণ বিন্যাস, শব্দ দূষণহীন নিরজনতা, বনানীর বৈচিত্র সব কিছু মিলে এক অপুর্ব সৈকত কুয়াকাটা।
এর পরে চোখ গেলো মাছ ধরার ট্রলারের দিকে। সব কিছু মিলে যেনো এক কল্পনার দেশে হারিয়ে গিয়েছিলাম। এর পরে আমরা সাগরের পানি তে অনেক মজা করলাম। সাগরের পাড়ে তখন কাবাডি খেলতেছিল জেলে রা। তারা মাছ ধরার আগে কাবাডি খেলে নিজেদের শরীর সতেজ করে নেয়। তাদের কাবাডি খেলাও উপভোগ করেছিলাম।
সাগরের বালু চরে হাঁটা ছিল আলাদা আনন্দ। এভাবেই ঘুরতে ঘুরতে আমরা আমাদের দুপুরের খাবার শেষ করি। সেখানকার খাবার ছিলো অসাধারণ মজা। সামুদ্রিক কাকড়া খেয়েছিলাম প্রথম বার। এর পরে কিছু রাখাইন আদীবাসিদের সাথে কথা বল্লাম তাদের জীবন বৈচিত্র দেখলাম। এর পরে ভ্যান গাড়ী তে করে যাচ্ছিলাম পশ্চিমের দিকে।
যাইহোক এর পরে সূর্যাস্ত দেখার জন্য অধীর হয়ে আছি। সন্ধে নামার পথে। সূর্য টা যেন পশ্চিম আকাশ থেকে একটু একটু করে সাগরে মিলিয়ে জাচ্ছিল আহা অপরুপ সেই ছবি।
ঢাকার শহুরে জীবন থেকে বের হয়ে অনাবিল এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে চলে যেতে পার তোমরাও।
কুয়াকাটার পূর্ব, পশ্চিম, দক্ষিণ এই তিন দিকেই বঙ্গোপসাগর তাই এই সৈকতের নাম সাগরকন্যা🥰🥰। সাগরকন্যা র অপরুপ সৌন্দর্য।।যা দেখে আমি মুগ্ধ। সেই সৌন্দর্যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে বার বার।
আজ ২০২০ এখনো সেই ভ্রমণ আমার স্মৃতিতে উজ্জ্বল ভাবে অবিচল। আবারো হারিয়ে যেতে মন চায়। সেই অপুর্ব প্রকৃতির মাঝে। এবার ফেরার পালা। আবার সেই যান্ত্রিক জীবন।। ফেরার পথে আবার সব কিছু চুপ করে কল্পনা করে নিলাম।
সেই ভ্রমণ টা আমার স্মৃতিতে অটুট থাকবে আজীবন।।স্মৃতিতে অটুট হয়ে থাকবে জোয়ারের পানিতে শামুক কুড়ানো, পায়ের উপর আঁছড়ে পরা সাগরের পানি।
image by : wikipedia.org