শামসু এখন গ্রামের পাশের কবরস্থানে দাড়িয়ে আছে। সামনের কবর টা তাকে খুড়তে হবে।এক পৈশাচিক আনন্দ আর রাগে শামসুর মন যেন একদম টগবগ করে উঠছে। শামসু কবর খোড়া আরম্ভ করে দিল। কবর খুড়তে গিয়ে শামসু অনুভব করলো এক বিদঘুটে গন্ধ তার নাকে গিয়ে লাগছে। তা তো লাগার ই কথা। মাত্র কালই তো রতন মারা গেল।
২ বছর আগের কথা। রতন আর শামসুর তখন গলায় গলায় মিল। একসাথে গ্রামের ক্ষেতে কাজ করে দুজন। কিন্তু শামসু বুঝতে পারে নি রতন কখনো চাইতো ই না যে শামসু বেচে থাকুক। শামসুর সাথে তখন ফুলকলির বেজায় ভাব। দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসে। সামনেই তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রতনের কুনজর যে ফুলকলির দিকেও ছিল! ইশ! তা যদি শামসু ভ্রূণাক্ষরেও টের পেতো!!
সেদিন গঞ্জে গিয়েছিল দুজন। ফিরতে ফিরতে তখন রাত ২ / ৩ টা বেজে গেল। শামসুর পিছে পিছে রতন হাটছিল।হঠাৎ পিছন থেকে শামসু অনুভব করলো এক ধারালো ছুড়ির আঘাত। প্রচন্ড আর্তনাদে শামসু লুটিয়ে পড়লো। রতন তখন শামসুর লাশ টেনে হেচঁড়ে গ্রামের পাশের কবরস্থানে নিয়ে গিয়ে কবর খোড়া শুরু করলো। কবরে লাশ নামিয়েই কি নির্বিঘ্নে রতন চলে গেল! আর ফুলকলিও কিছুদিনের মধ্যে তাকে ভুলে রতনকে বিয়ে করে নিল। কিন্তু তাদের আর সুখে সংসার করা হলো না। শামসুর অভিশাপেই বেচারা কিছুদিন পর নদী তে ডুবে মরে গেল।
কী যন্ত্রণায় দিন গুলো পার করেছে শামসু। আজ সেগুলো অবসানের পালা! তাজা রক্তের গন্ধে শামসুর মন ভরে যাচ্ছে। কবর খুড়ে শামসুর লাশ টেনে হিচঁড়ে খুবলে খাচ্ছে শামসু। ক্ষুধায় আর যন্ত্রণায় শামসু একনাগাড়ে খেয়ে যাচ্ছে। আহ! কী শান্তি। এত শান্তির রেশ বহুদিন পায় নি শামসু!