আমি তো বলেছি, যতোদিন আমি চাকরী পাবো না ততোদিন পর্যন্ত আমি বিয়ে করবো না। মেয়ে মানুষের এতো ঢং ভালো না। দুইদিন পর বর খাওয়াবে, সেখানে চাকরি করার কী দরকার।
বর খাওয়াবে সেটা তার দায়িত্ব। কিন্তু নিজে আত্মনির্ভরশীল হওয়া উচিত। আর এটাই ফাইনাল। চাকরি পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে বিয়ে করবো।
আবার, ছয় মাস কেনো?
কারণ নিজের টাকায় বিয়ে করতে চাই। তোকে আর কিছু বলবো না । তোর যা ইচ্ছে কর বলে ভাবী চলে গেলেন এরপর এক বছরের মতো চলে গেলো। একটা বেসরকারী কোম্পানিতে আমার চাকরি হইছে। বিয়ে ঠিক হইছে রোহানের সাথে। ও ব্যাংকে জব করে। যথারীতি বিয়ে সম্পন্ন হলো আমাদের। এরেন্জ ম্যারেজ হইছে বলে ওর সাথে সম্পর্ক develop হইতে সময় নিছে। কিন্তু এখন আমাদের একে অপরকে ছাড়া চলে না।
ভালোই চলছিলো সব। হঠাৎ করে রোহানের এক্সিডেন্ট হয়। পঙ্গু হয়ে যায় রোহান। হুইল চেয়ারে চলাফেরা করে। জব ও চলে গেলো ওর।শুরু হলো সমাজের নানান কথা। রোহানকে যেনো ছেড়ে দেই। বাচ্চা নেই। ভালো বেতনের জব করি, ভালো ছেলে দেখে যেনো বিয়ে করি।আমি কারো কথা শুনি নি। রোহানের হাতটা ছাড়ি নি। একা লড়াই চালিয়ে গেছি। ডাক্তার বলেছে রোহান ঠিক হবে কিন্তু সময় যাবে। রাত্রি, চাইলে আমাকে ছেড়ে যেতে পারো।
জনাব,এই ধরনের কথা যদি বলেন, রাত্রে বাহিরে থাকতে দিবো। ছেড়ে যাবো কেনো? ভালোবাসার কমতি যদি থাকতো আপনার তরফ থেকে তাহলে যাইতাম। সো এসব কথা নো মোর।
টানা ছয়টা বছর পরিশ্রম করেছি। একা সংসার,জব,রোহানের দেখাশোনা, শশুর, শাশুড়ীর দেখাশোনা করেছি। এর মধ্যে আমার পরিবার চাইছে আমি যেনো রোহানকে ছেড়ে দেই। আজ মনে হচ্ছে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছি।রোহান হাঁটতে পারে কিন্তু একটু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
ওকে নিয়ে আজ বাহিরে ঘুরতে বের হইছি। রাত্রি, একটা জিনিস কী জানো তুমি যদি না থাকতে আমার পরিবার না খেয়ে থাকতো।
তোমার পরিবার মানে আমার পরিবার।আমার পরিবারের জন্য আমি করেছি। ভালোবাসার জন্য। তাই তো পাগলী, আমি আপনাকে বিয়ে করছি। ভালোবাসী আমার পাগলীটা।